English | বাংলা
Logo
 

 

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক স্বৈরতন্ত্রের বিপজ্জনক পথ

আমার দেশ অনলাইন, ১৫-০৮-২০১১

 


Michael Hutter 2010 "Götzendienst" (Idolatry)


 

১৯৭৩ সালের বিশ্ববিদ্যালয়-আইন স্বাধীন বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য আশীর্বাদ হয়েছিল। এর সুফল স্বরূপ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষা-সংস্কৃতি-মনুষ্যত্বের কাঙ্ক্ষিত ফুল ফুটতে শুরু করেছিল। কিন্তু, তারপর যত দিন গেছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ধীরে ধীরে, কিন্তু সুনিশ্চিতভাবে, উচ্চশিক্ষার এক প্রকার আবর্জনাকেন্দ্রে পরিণত হতে থাকে। এই প্রক্রিয়ার পরিণামে আজকের দিনে এসে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আরো বেশি অধঃপতনের দিকে গেছে। শিক্ষকেরা রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি করেন। উদ্দেশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে-বাইরে কর্তৃত্ব অর্জন করা, ক্ষমতাধর হয়ে ওঠা, এবং নানান রকমের সুযোগসুবিধা ভোগ করা।


সব চেয়ে যেটা বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে সেটা হলো, প্রফেসরদের একটা অংশের ক্রমাগতভাবে প্রশাসকে পরিণত হয়ে ওঠা। শিক্ষকসুলভ ও সহকর্মীসুলভ মনোভাবের বদলে ঔপনিবেশিক প্রশাসকসুলভ মনোভাব এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তা-অধ্যাপকদের স্বাভাবিক মনোবৃত্তিতে পরিণত হয়েছে। স্বয়ং উপাচার্য থেকে শুরু করে তাঁর নিচের দিকের কর্তাব্যক্তিরা মনে করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, কর্মচারী, এমনকি শিক্ষকেরা তাঁদের অধীনস্ত প্রজা। এই প্রজাদের কর্তব্য হচ্ছে যাবতীয় কর্তাব্যক্তিদেরকে তোয়াজ করে চলা, তাঁদের কথা শুনে চলা, তাঁদের হুকুম পালন করা। না করলে কারোরই চাকরি-আত্মমর্যাদা-অধিকারসমূহের কোনো নিশ্চয়তা থাকবে না। কোন দিক থেকে বিপদ আসবে কেউ বলতে পারেন না।


অবস্থা এমন দাঁড়াচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক যদি কোনো কর্তা প্রফেসর প্রক্টর প্রভোস্ট প্রোভিসি বা ভিসির বিরাগভাজন হন (তার কারণ যা-ই হোক), তাহলে ঐ শিক্ষকের খবর আছে। ভিসি নিজে বা তাঁর স্তাবক-অধ্যাপকগণ কান-কথা বানান, জায়গামতো গিয়ে কথা লাগান, এসব কথা ক্রসচেক করে দেখা হয় না। নানান উপলক্ষে এই ধরনের ‘ভিন্নমতাবলম্বী’ শিক্ষকদের এখন রীতিমতো তালিকা বানানো হয়। তালিকা ধরে ধরে তাঁদেরকে ডেকে আনা হয় উপাচার্যের কার্যালয়ে। তারপর বকাঝকা-ভর্ৎসনা, কাল্পনিক ও বাস্তব আইনকানুনের ভয়ভীতি প্রদর্শন, মানসিক চাপ প্রয়োগ করা থেকে শুরু করে নানান মাত্রায় ‘শাস্তি’ প্রদান করে ঐসব শিক্ষককে ‘শৃঙ্খলা’র অধীনে নিয়ে আসার কাজ চলে। ‘ভিন্নমতাবলম্বী’ শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক ছাত্র-কর্মী, ও ‘ভিন্নমতাবলম্বী’ শিক্ষার্থী-সাংবাদিকদেরকেও একইভাবে ডেকে নিয়ে গিয়ে ‘সাইজ’ করা হয়। স্বাধীনচেতা ও আত্মসম্মানবোধসম্পন্ন পেশাদার শিক্ষার্থী-সাংবাদিকেরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এই প্রক্রিয়ার নাম দিয়েছেন ‘রিম্যান্ডে নেওয়া’। তাঁদেরকে রিম্যান্ডে নেওয়া হয় সাধারণত প্রক্টর অফিসে। এ সবের বাইরেও ভিসির কম্যান্ডে থাকে সরকারী ছাত্র সংগঠনের অস্ত্রধারী বাহিনী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবনে বসবাসরত ‘আবাসিক’ পুলিশ বাহিনী। ভিসি-প্রক্টরদের রুচি-মর্জি-পরিস্থিতি মাফিক এই দুই সশস্ত্র বাহিনীকে কাজে লাগানো হয়, অথবা হয় না। এই সব ছাড়াও আছেন ভিসির অনুগ্রহভাজন, আনুগত্যপরায়ণ, সুবিধাভোগী শিক্ষকদের এক বিশাল আমলা-শিক্ষক-বাহিনী। সব মিলিয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখন ছোট ছোট একেকটা সর্বাত্মক-স্বৈরতন্ত্রী রাষ্ট্র-কাঠামো ধারণ করেছে।


পাকিস্তান আমলে ছিল ১৯৬১ সালের বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার জঘন্য কালাকানুন। এই কালাকানুন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে-বাইরে মারাত্মক প্রশাসনিক স্বৈরতন্ত্র সৃষ্টি করেছিল। শিক্ষকদেরকে হয় উচ্চপদস্থ কর্তাদের তাঁবেদারি করতে হতো, না হয় তো সারাক্ষণ আতঙ্কে থাকতে হতো। অপদস্থ-অপমানিত হওয়ার আতঙ্ক। চাকরি হারানোর আতঙ্ক। নিপীড়িত হওয়ার এবং বঞ্চিত হওয়ার আতঙ্ক। স্বাধীন বাংলাদেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতিসমূহের ফেডারেশনের আন্দোলনের মুখে তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকার ১৯৭৩ সালের বিশ্ববিদ্যালয় আইন প্রথমে অধ্যাদেশ আকারে, পরে আইন হিসেবে পাশ করেন, এবং তুমুলভাবে অভিনন্দিত হন।


তিয়াত্তরের আইন এমন কতকগুলো বিধিবিধান প্রণয়ন করে যা ছিল, রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত স্বায়ত্তশাসনের গ্যারান্টি। এই আইন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ব্যক্তি-শিক্ষকদের চিন্তা-গবেষণা-মতপ্রকাশ-সভা-সমিতি-তৎপরতার স্বাধীনতার নিশ্চয়তাও দিয়েছিল। এই নিশ্চয়তার মূর্ত প্রতীক ছিল শিক্ষকদের চাকরির পূর্ণ নিশ্চয়তা (এই আইনে নৈতিক স্খলন কিংবা শিক্ষাদানে অক্ষমতার চূড়ান্ত কোনো পরিস্থিতিতেই শুধু কারো চাকরিচ্যূতি ঘটানো যেতে পারে, যার বাস্তব দৃষ্টান্ত নিতান্তই বিরল।) শিক্ষকদের নিজ নিজ বিবেকের দায়ে পরিচালিত হওয়ার পূর্ণ স্বাধীনতাই ছিল এই আইনের মূল চেতনা। এই আইনের আরো একটা মূল স্পৃহা ছিল যেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ গণতান্ত্রিক পদ্ধতি-প্রণালীতে ও সামষ্টিক অংশগ্রহণের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। এই আইনের এইসব ইতিবাচক, স্বাধীনতাশীল ও গণতান্ত্রিক দিকের সুফল হিসেবে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীন বাংলাদেশের সমাজে পরম আরাধ্য মুক্ত জনপরিসর হিসেবে তার সদর্থক ভূমিকা পালন করেছে, সবাই জানেন।


সবাই যেটা জানেন না, তিয়াত্তরের আইনে মারাত্মক কিছু চোখ-ফস্কে-যাওয়া ত্রুটি ছিল। (মনে রাখা দরকার, ১৯৬১-র কালাকানুনের কিছু কিছু জিনিস ১৯৭৩-এর আইনেও থেকে গিয়েছিল।) এই আইনে রাষ্ট্রের হাত থেকে বিশ্ববিদ্যালয়-প্রতিষ্ঠানের আপেক্ষিক স্বাধীনতা ও স্বায়ত্তশাসন দেয়া হলেও এর অভ্যন্তরীন পরিচালনা-কাঠামোতে উপাচার্যের এককেন্দ্রিক স্বৈরতন্ত্র সৃষ্টি অবকাশ থেকে গিয়েছিল। এই কাঠামো নিয়ে আমি এক/এগারো’র জরুরি আইনের সময় বিস্তারিত আলোচনা করেছি। পরে ঢাবি-র যোগাযোগ পত্রিকায় তা ছাপাও হয়েছে। সংক্ষেপে বললে, তিয়াত্তরের আইনে উপাচার্যের পদটিকে পরোক্ষ নির্বাচন এবং কতকগুলি গণতান্ত্রিক বিধিবিধানের মোড়কে চাইলেই স্বৈরতন্ত্রী হয়ে উঠতে পারেন এমন একজন ‘সর্বশক্তিমান’ সম্রাটের পদে পরিণত করা হয়েছিল। পাকিস্তান আমলের অভিজ্ঞতার কারণে রাষ্ট্রের হাত থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতার কথা যতটা মনোযোগ দিয়ে ভাবা হয়েছিল, ততটা মনোযোগ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ প্রশাসনিক কাঠোমোকে গণতান্ত্রিকভাবে পরিচালনার মতো করে তৈরি করার কথা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীন পরিচালনা-প্রণালীতে সকল ব্যক্তিশিক্ষকদের পূর্ণ ও স্বাধীন অংশগ্রহণের দিকটি নিয়ে ভাবা হয় নি। এতেই রোপিত ছিল সর্বনাশের বীজ। সেই বীজ আজ উপ্ত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীন পরিচালনা-কাঠামোতে উপাচার্যের এককেন্দ্রিক স্বৈরতন্ত্র সৃষ্টির অবকাশ পরিপূর্ণ হয়েছে।


তিয়াত্তরের আইনটাই এমন যে, যে-ভালোমানুষটি আগের দিন একজন সাধারণ অধ্যাপক ছিলেন, পরের দিন উপাচার্য পদে মনোনয়ন পেয়ে তিনি একজন ‘গণতান্ত্রিক বাদশাহ’ হওয়ার সুযোগ পান। অধ্যাপকের সাধারণ ‘পচাধচা’ কোয়ার্টার ছেড়ে তিনি তখন সম্রাটের প্রাসাদেঅর্থাৎ রাজপ্রাসাদের মতো, গণভবনের মতো, উপাচার্যভবনেগিয়ে শাহী জীবনযাপন করতে শুরু করেন। তিনি তখন রাজা। বাকি সব শিক্ষক-অধ্যাপক প্রজা। উপাচার্য হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে কে কতটুকু বাদশাহী করবেন, কে কতটুকু অধ্যাপনা করবেন, তা ব্যক্তিভেদে কমবেশি হয় মাত্র। বলতে গেলে যাবতীয় কর্মকাণ্ডের ফাইলই একজন মাত্র ব্যক্তি-উপাচার্যের হাত দিয়ে পাশ হয়। বলতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের যাবতীয় অনুষ্ঠানেই তিনি উপস্থিত থেকে আসন অলঙ্কৃত করেন। ঔপনিবেশিক ব্রিটেনের রাণীর মতো সবাই তাঁর কাছে আবেদন-নিবেদন করেন। তিনি আশ্বাস দেন, বাতিল করেন, অনুমোদন করেন, উপদেশ দেন, আদেশ দেন, বিবেচনা করেন, অবজ্ঞা করেন, উপেক্ষা করেন, মৌন থাকেন, হাসেন, গম্ভীর হন, বিরক্ত হন, প্রসন্ন হন। মোট কথা, যা করার তিনিই করেন। তিনিই একমাত্র কর্তা। বাকি সব ক্ষুদে আমলারা তাঁর হুকুমবরদার, আদেশের কর্মচারী মাত্র। উপাচার্য তো উপাচার্য, তাঁর অধীনস্ত সামান্য একজন অফিসার-আমলাও চাইলেই আপনাকে ঘোল খাওয়াতে পারেন (সবাই অবশ্য সেরকম নন)। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক চাকুরের যাবতীয় ভালোমন্দ, উন্নতি-অবনতি উপাচার্যের দপ্তরে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ফাইলের ভাগ্যের ওপর নির্ভর করে। বাদশাহর হুকুম ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পাতা নড়ে না, বাতাস বয় না। তাঁর বিরুদ্ধে নালিশ করার মতো কেউ নাই। তাঁর সাথে চাইলেই আপনি কথা বলতে পারবেন না। শিক্ষার্থী বা নিচের দিকের কর্মচারী হলে তো কথাই নাই, প্রফেসরদের পক্ষেও তিনি সহজ ধরাছোঁয়ার বাইরে। স্তাবক-আমলা এবং স্তাবক-শিক্ষকদেরকে ভেদ করে দেনদরবার করার কোনো উপায় নাই বললেই চলে। অবশ্য আপনি তাঁর অনুগ্রহভাজন হলে আলাদা কথা।


এই অবস্থার পরিণাম কী? নতুন শিক্ষকদের পদে দলীয় নিয়োগ, বিবেক-বর্জিত আনুগত্যপরায়ণদের নিয়োগ, শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ব্যাহত হওয়া, কর্তাদের প্রয়োজনমাফিক নানান মাত্রার সন্ত্রাস ও ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি হওয়া, প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার সর্বস্তরে দক্ষতা ও কর্মক্ষমতা হ্রাস পাওয়া, শিক্ষকদের নিজেদের অ্যাকাডেমিক কাজ বাদ দিয়ে ফাইলের পেছনে দৌড়ানো অথবা ক্ষমতাসীন শিক্ষকদের রাজনৈতিক দলের কাজে-কর্মে-সমর্থনে ব্যতিব্যস্ত থাকতে বাধ্য হওয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাতিষ্ঠানিক ও অ্যাকাডেমিক মান পড়ে যাওয়া, এবং সর্বোপরি শিক্ষকদের স্বাধীন কর্মকাণ্ড, স্ব স্ব বিবেকবুদ্ধি-নীতি-নৈতিকতা দ্বারা পরিচালিত হওয়ার ক্ষেত্রে মারাত্মক প্রতিকূল পরিবেশ সৃষ্টি হওয়া ফলত জাতির আলোকবর্তিকা হিসেবে শিক্ষকদের পথপ্রদর্শনের ক্ষেত্রে সক্ষমতা ও আগ্রহে ভয়াবহ ভাটার টান দেখা দেওয়া।


পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অন্ধকার অবস্থায় নতুন নতুন অন্ধকারতর মাত্রার দৃষ্টান্ত স্থাপনের নানান উদ্যোগ নিয়ে চলেছেন রাবি-প্রশাসন। সাম্প্রতিকতম ঘটনা হলো, রাবি-উপাচার্য নাট্যকলা ও সঙ্গীত বিভাগের তিন জন শিক্ষকের চাকরি নবায়ন করেন নি। এঁরা জনপ্রিয় ও তুখোড় শিক্ষক। এঁরা ঐ বিভাগেরই প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী। এই বিভাগে এঁদের রেজাল্টই সবচেয়ে ভালো। এঁদেরকে তিনি এবং বিভাগে তাঁর প্রিয়ভাজন সভাপতি মিলেই নিয়োগ দিয়েছিলেন অ্যাডহকে। ছয় মাস পর সেই নিয়োগ নিয়মানুযায়ীই নবায়ন করেছিলেন তাঁরা দুজনে মিলেই। দ্বিতীয়বার নবায়নের সময় এসে এবার উপাচার্য মহোদয় আর তাঁদেরকে নবায়ন করছেন না। তারিখ পেরিয়ে যাবার পরও ফাইলটা ফেলে রেখেছেন। এঁদের অপরাধটা কী? অপরাধ হচ্ছে এঁরাসহ বিভাগের ১৮ জনের মধ্যে ১৬ জন শিক্ষক ঐ উপাচার্য-প্রিয় সভাপতির (যিনি আসলে বাণিজ্য অনুষদের শিক্ষক ছিলেন, নাট্যকলায় বিশেষ ব্যতিক্রমী ব্যবস্থায় সভাপতি হয়ে গিয়েছিলেন ঐ বিভাগটিকে ‘সাইজ’ করার জন্য) অপসারণ চেয়ে আন্দোলন করেছিলেন। বাকিদেরকে এখনই কিছু করা যাচ্ছে না বলে, অ্যাডহকের প্যাঁচে ফেলে এই তিন তরুণ শিক্ষককে এখন বলির পাঁঠা করা হচ্ছে তাঁরা তাঁদের বিভাগ পরিচালনার ক্ষেত্রে নিজেদের মতপ্রকাশ ও স্বাধীন অবস্থান গ্রহণ করেছেন বলে। অ্যাডহকে নিয়োগ হলে ‘শিক্ষক’ হয়ে থাকতে হয় না, নিয়ম নাই, ‘ব্রয়লার মুরগি’ হয়ে থাকতে হয়। অথচ তাঁরা স্বাধীন শিক্ষক বলে ভেবেছিলেন নিজেদেরকে। নিয়ম ভাঙার জন্য তাই শাস্তি দেওয়ার আয়োজন।


নাট্যকলা ও সঙ্গীত বিভাগের আন্দোলন ও কর্তৃপক্ষের প্রশাসকসুলভ অনড় মনোভাব নিয়ে বিস্তারিত কথা আরেক দিন। আপাতত শুধু খেয়াল করে রাখা দরকার যে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক স্বৈরতন্ত্রের এই বিপজ্জনক পথ কত দূর পর্যন্ত বিপদ ডেকে আনতে পারে তা নিয়ে আমাদের ভাবনার কোনো প্রকাশ দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না।

 

 

রচনা: রাবি ১লা আগস্ট ২০১১
আদিপ্রকাশ
:
আমার দেশ অনলাইন, ১৫ই আগস্ট ২০১১

 

 

বিশেষ দ্রষ্টব্য


এখানে আদি পাঠের মুদ্রণপ্রমাদ এবং বাক্যগঠনের সাধারণ ত্রুটিবিচ্যুতি মেরামত করা হয়েছে। শেষ বাক্যটি পরে যুক্ত করা হয়েছে।

 

 

 

 

 

 

 
 
 
 
 
Logo