ফেসবুক, ০৯-০৬-২০১৮
The Writing Prophet (St. John on Patmos) by Ernst Barlach, 1919 woodcut print
এই রাষ্ট্র-জম্বিরা কি জামের সাথে জাম্বুরার পার্থক্য বোঝেন, আব্বা বলো? শুধু ধরো, মারো, খুন করো, টাকা কামাও, ক্ষমতা জমাও। পৃথিবীর বহু দেশেই তো গাঁজা একটি হালাল (বৈধ) পত্রিকা (পাতা)। হ্যাঁ, হ্যাঁ, গাঁজাও অনেকের জন্য অমঙ্গলের কারণ হতে পারে বৈকি। আলবৎ পারে। সেটা যার যার আক্কেলের কারবার, হুঁশের সমস্যা। হাইওয়ে জিনিসটাও তো খুনডাকাতির কাজে লাগতে পারে, তাই না, মহাত্মন?
প্রত্যেক ব্যক্তি-লোক নিজের যত্ন নিতে শিখুক। নিজের দায়িত্ব নিজে নেওয়ার নামই তো স্বাধীনতা। রাষ্ট্র যদি আমার যত্নের দায়িত্ব নিতে চায়, তাহলে রাষ্ট্রই স্বাধীন থাকে, আমি থাকি দাস। রাষ্ট্রকে সেই দায়িত্ব আমরা নাগরিকেরা না দেই যেন। রাষ্ট্র বরং আমাদের শিক্ষার দায়িত্ব নিক। স্বাস্থ্যের দায়িত্ব নিক। হাজার হাজার সরকারি ইস্কুল আর হাজার হাজার সরকারি হাসপাতালে ভরে যাক দেশ। বিবিধ দ্রব্যের ফলাফল (ফল-অফল) নিয়ে দুর্দান্ত সব বিজ্ঞাপন-বিলবোর্ড-অ্যানিমেশনে ছেয়ে যাক দেশ। সে-ও তো শিক্ষাই। সেই শিক্ষার দায়িত্ব নিক রাষ্ট্র। বন্দুকযুদ্ধের পেছনে রাষ্ট্রের খরচ কত? সেই খরচেই জাতীয় মাদক-শিক্ষার খরচ পোষানো সম্ভব।
রাষ্ট্র একটু ইতিবাচক ভাবুক না! রাষ্ট্র এত নেতিবাচক হবে কেন, বলেন তো! আমার সন্তান মাদকাসক্ত বলে আমি তাকে গুলি করে মেরে ফেলব নাকি? আমার ভাই মাদকবিক্রেতা বলে আমি তার হাত কেটে হাতল বানাব নাকি? কেমন পিতা আমি তাহলে? কেমন ভাই আমি? সামনে যদি অধিক লাভজনক ও সম্মানজনক অন্য কোনো ক্রয়বিক্রয়-পেশা থাকে, তাহলে কে হায় হৃদয় খুঁড়ে মাদক বেচতে ভালোবাসে! ব্যতিক্রম আছে হয়ত কিন্তু আমাদের রাষ্ট্র-শাসকরা কতখানি উন্নত চরিত্রের, হ্যাঁ? রাজনীতিবিদদের মতো ইতর প্রাণী কয়টা আছে এই পোড়ার দেশে? আমাদের আদরের হুমায়ুন আজাদের "রাজনীতিবিদগণ" উপন্যাসটা মিথ্যা নাকি, ভগিনী ও ভাতৃসকল? ক্ষমতার মাদকে মত্ত রাষ্ট্রজম্বিরা এসেছেন আমাদেরকে আজ যম এবং জাম্বুরার অনুপ্রাস শেখাতে, হাহ! যে কভু করে নি পাপ, আল্লার কাছে মাফ কী করে সে পাবে? মায়ের জঠর থেকে কবরের দোলনা অব্দি নিষ্পাপ থেকে গেছে কোন বান্দা এই বঙ্গদেশে?
তার চে এই বর্ষায় গোটা বাংলাদেশে কদম ফুল ফুটুক। সুগন্ধে শুভ হয়ে উঠুক যাবতীয় সৈন্যবাহিনী। কবর থেকে উঠে এসে রাষ্ট্রযন্ত্রীদেরকে গোলাপ ফুলের পাঠশালায় ভর্তি করুন কবি শহীদ কাদরী। ‘কবিরা তো চিরকালই মিথ্যুক, তবু কি কবিতাগুলো মিথ্যে’? চা অথবা গঞ্জিকার পত্র আর পত্রিকার রৌশনে রঞ্জিত হন নি কোন শালার কবি বঙ্গদেশে? আবুল হাসানের আত্মা কিংবা নির্মলেন্দু গুণের নির্মল নিঃশ্বাস কথা বলে উঠুক আবার। শিল্পী সুলতানের কল্কিকে ছুঁয়ে যাক তো, দেখি কোন শয়তানের সাধ্য! ইয়ার্কি অনেক হয়েছে। কিন্তু সব শালা কবিরা কি ঠোলা হয়ে গেছে নাকি, বাপ? সব শালা পলিটিশিয়ান হয়ে গেছে। সলিমুল্লাহ খানের এক ক্যাজুয়াল সাক্ষাৎকার নিয়ে সব কলকল করে ভাসাচ্ছে ইথার! সাহিত্যের গদি নিয়ে শুরু হয়ে গেছে টানাটানি। ইশ! কবি না খবিস এই সভে?— যত নির্লজ্জের দল! সত্য কথা বলা বুঝি কবিরা গুণাহ এই দেশে!
তার চে বৃষ্টি হোক। এ বরষায় গোটা দেশে কদম ফুটুক। সুগন্ধে শুভ হয়ে উঠুক সৈন্যরা। নিজের কবর থেকে উঠে খোদ রাষ্ট্রযন্ত্রটাকে কবিতা শেখান কবি শহীদ কাদরী।
ফেসবুক-পোস্ট: ৯ই জুন ২০১৮
পরিমার্জিত পাঠ
Schema and Logo: Salim Reza Newton
Home Pic: Childhood alphabet of Lalon Susmita Meera on wall
Developed by Fecund IT SolutioNs, Powered by UniqueIT